famous indian personalities in history and their achievements in bengali |
আজকের বিষয় "ভারতের ইতিহাসে (famous indian personalities in history and their achievements in bengali )বিখ্যাত ব্যাক্তি ও তাদের অবদান "যার জন্য আমাদের ভারতের স্বাধীন হয়েছে ,যদি আরো কোনো বিষয় এর ওপর তোমাদের মতামত থাকে তো অবশই কমেন্ট বাক্স এ লিখে জানাবেন
রামমোহন রায়
famous indian personalities and their achievements in bengali |
• ' রাজা ' রামমোহন রায় ( ১৭৭২-১৮৩৩ খ্রিঃ ) ছিলেন ভারতীয় নবজাগরণের অগ্রদূত ।
● তাঁকে ‘ ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ ' ( the first modern man of India ) ' আধুনিক ভারতের জনক ' ( ' Father of modern India ' ) প্রভৃতি নানা অভিধায় ভূষিত করা হয়েছে । . রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ' ভারত পথিক ' বলে সম্মান জানিয়েছেন । . পন্ডিত জওহরলাল নেহরু - র মতে , তিনি হলেন ' ভারতীয় জাতীয়তাবাদের জনক ' অনেক তাঁকে ' আধুনিক ভারতের ইরাসমাস ' বলে অভিহিত করেছেন ।
• ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে বহু দেববাদের বিরুদ্ধে এবং একেশ্বরবাদের সমর্থনে ফারসি ভাষায় তিনি একটি পুস্তিকা রচনা করেন । তার নাম ' একেশ্বরবাদীদের প্রতি ' ।
• কেবলমাত্র এই নয় - বেদ ও উপনিষদের বাংলা অনুবাদ করে তিনি তাঁর মতবাদ প্রচারে ব্রতীহন ।
● তার ধর্মমত সম্পর্কে আলোচনার জন্য ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় ‘ আত্মীয় সভা ' স্থাপন করেন ।
• তিনি বাংলা , হিন্দু , ফারসি ও ইংরেজি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন ।
• ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজি - বাংলা দ্বিভাষিকব্রহ্মনিক্যাল ম্যাগাজিন ব্রাহ্মণ সেবধি , বাংলা ভাষায় সম্বাদ কৌমুদি , এবং ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে ফার্সিভাষায় প্রকাশিত মীরাৎ - উল - আখার নামক তিনটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন ।
• ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করতে উদ্যোগী হলে তিনি আন্দোলন গড়ে তোলেন ।
• ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে মোঘল বাদশা দ্বিতীয় আকবর তাঁকে রাজা উপাধিতে ভূষিত করেন ।
• তিনি ১৮৩৩ সালে মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হয়ে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে প্রয়াত হন ।
দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত (‘ বিক্রমাদিত্য ’)
• সমুদ্রগুপ্তের পুত্র দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত পিতার সুযোগ্য পুত্র ছিলেন । তিনি ' বিক্রমাদিত্য ' উপাধি নিয়ে সিংহাসনে বসেন ।
. ● পশ্চিম উপকূলের গুজরাট বন্দর থেকে রোম সাম্রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যের পথ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে তিনি শক - যুদ্ধে অবতীর্ণ হন ।
• শক রাজা তৃতীয় রুদ্রসেনকে পরাজিত করে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ' শকারি ' বা ' শকদের শত্রু ' উপাধি ধারণ করেন । তিনি পরম ভাগবত উপাধিও গ্রহণ করেন । ..
• এই অঞ্চলে উজ্জয়িনী নাগরীতে তিনি দ্বিতীয় রাজধানী স্থাপন করেন আরেকটি রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র ।
● ● দিল্লির কুতুবমিনারের কাছে মেহরৌলি গ্রামে বিখ্যাত লৌহস্তম্ভটি ধরা হয় দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বানিয়েছিলেন । তাঁর সেনাপতি আম্রকর্দব বৌদ্ধ ছিলেন এবং মন্ত্রী বীরসেন ছিলেন শৈব । তার রাজসভায় ' নবরত্ন ' বা ন'জন পন্ডিত ( এই নবরত্ন হলেন - কালিদাস , ধন্বন্তরি , ক্ষপণক , শঙ্কু , বেতালভট্ট , ঘটকর্পর , অমরসিংহ , বরাহমিহির ও বররুচি ) ছিলেন । দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের মন্ত্রী বীরসেন - ও একজন বিখ্যাত কবি ছিলেন ।
• তিনি ' বিক্রম সম্বৎ ' বলে একটি সম্বৎ বা অব্দ প্রবর্তন করেন । দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের ' বিক্রম সম্বৎ ' ৫৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রবর্তিত হয় । . দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালে বিখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক ফা - হিয়েন বা ফাজিয়ান ( Faxian ) ভারতে আসেন । প্রায় দশ বৎসর ( ৪০০-৪১১ খ্রিঃ , মতান্তের ৪০৫-৪১১ খ্রিঃ ) ভারতে অবস্থানের পর বাংলায় তাম্রলিপ্ত নন্দর থেকে সমুদ্রপথে তিনি ভারত - ত্যাগ করেন ।
● ফা - হিয়েন রচিত ' ফো - কুয়ো - কিং ’ নামক ভ্ৰমণ - কথা থেক ভারত সম্পর্কে নানা মনোজ্ঞ বিবরণ পাওয়া যায় ।
● দ্বিতীয় চন্দ্ৰ প্তের আমলে উপকুলে তাম্রলিপ্ত ওপশ্চিম উপকূলে সোপারা উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল ।
●সমুদ্রগুপ্ত সমুদ্রগুপ্তর সভাকবি হরিষেণ রচিত ' এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকে তার সামরিক প্রতিভা ও রাজত্বকালে পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাওয়া যায় । " শক্তিমান মাত্রই যুদ্ধ করবে ও শত্রু নিপাত করবে ' -চাণক্যর এই আদর্শ সমুদ্রগুপ্ত অনুসরণ করেছিলেন । সমুদ্রগুপ্ত নিজেকে ' একরাট ' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন । তিনি দাক্ষিণাত্যের রাজন্যর্গের কাছ থেকে কর গ্রহণ ও আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে তাদের নিজ নিজ রাজ্য ফিরিয়ে দেন । হরিষেণ সমুদ্রগুপ্তের এই নীতিকে ‘ গ্রহণ পরিমোক্ষ ' বলে বর্ণনা করেছেন । সিংহল - রাজ মেঘবর্ণ তার অনুমতিক্রমে বোধগয়ায় একটি বৌদ্ধমঠ স্থাপন করেন । দিগ্বিজয়ের শেষে সমুদ্রগুপ্ত অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন এবং সার্বভৌম শক্তির অধিকারী হিসেবে তিনি ' অশবমেধ - পরাক্রম ' , ' পরক্রমাঙ্ক ' , ' সর্বরাজোচ্ছেত্তা ' , ' অপ্রতিরথ ' প্রভৃতি উপাধি ধারণা করেন । ঐতিহাসিক স্মিথ তাঁকে ' ভারতীয় নেপোলিয়ন ' বলে আখ্যায়িত করেছেন । কেবলমাত্র যোদ্ধা বা সুশাসক হিসেবেই নয় - কবি , সঙ্গীতজ্ঞ , শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত ও শিক্ষা সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন । তার ' কবিরাজ ' শ্রেষ্ঠ কবি উপাধি থেকে কবিরূপে তাঁর অবিস্মরণীয় খ্যাতির পরিচয় পাওয়া যায় । তাঁর মুদ্রায় অঙ্কিত নিজের বীণাবাদনরত মূর্তি থেকে তাঁর সংগীতানুরাগের কথা জানা যায় । বিখ্যাত সংস্কৃত পন্ডিত হরিষেণ তাঁর সভাকবি ছিলেন । তিনি বৌদ্ধ পন্ডিত বসুবন্ধু - কে মন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেছিলেন । গুপ্ত যুগে বৌদ্ধিক ও জাগতিক সমৃদ্ধির যে চরম বিকাশ পরিলক্ষিত হয় তার সূচনা হয়েছিল সমুদ্রগুপ্তের রাজত্বকালেই । ঐতিহাসিক গোখলে তাঁকে ' প্রাচীন ভারতীয় সুবর্ণ যুগের অগ্রদূত ' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
• ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ৫ ডিসেম্বর থেকে অসুস্থতার কারণে তাঁকে নিজ বাসভবনে অন্তরীণ রাখা হয় ।
• ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি জিয়াউদ্দিনেরছদ্মদেশে তিনি কলকাতা ত্যাগ করেন এবং পুলিশকে এড়িয়ে বিদেশে পৌঁছান ।
• ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে জার্মান যুদ্ধবন্দি এবং ভারতীয় সেনাদের নিয়ে স্বাধীন ভারতীয় লিজিয়ন ' নামক একটি সেনাদল গঠন করেন । • এই সেনাদল তাঁকে নেতাজি ' অভিধায় ভূষিত করে । এই দলের সেনাদের একে অপরকে অভিবাদন জানানোর জন্য স্লোগান ছিল ' জয়হিন্দ ' । . ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে . ১৫ জুন রাসবিহারী বসুর সভাপতিত্বে ' ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ ' গঠিত হয় ।
• এই সভাতে সুভাষচন্দ্র বসুকে জার্মানি থেকে জাপানে আসার আহ্বান জানানো হয় ।
• ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ১ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে রাসবিহারীবসু আনুষ্ঠানিকভাবে আজাদহিন্দ বাহিনী গঠন করেন । এই বাহিনীর প্রধান ছিলেন মোহন সিং । • ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ১৩ জুন সুভাষচন্দ্র বসু টোকিও পৌঁছায় এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী তোজো তাঁকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহায্যের আশ্বাস দেন ।
• ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ৪ জুলাই সিঙ্গাপুরে রাসবিহারী বসু নেতাজির হাতে ' ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেস লিগ ' এর দায়িত্বভাব তুলে দেন ।
• নেতাজি ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে , ২৫ আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ' আজাদ হিন্দ বাহিনী ' - র নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং আজাদ হিন্দ ফৌজকে গান্ধি ব্রিগেড , নেহরু ব্রিগেড , আজাদ ব্রিগেড , ঝাঁসির রানি ব্রিগেড ( নেতৃত্ব লক্ষ্মী স্বামীনাথন ) সুভাষ ব্রিগেড ও বাল সেনাদল নামক বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করেন ।
• ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ২১ অক্টোবর নেতাজি ' আজাদ হিন্দ সরকার ' ( সিঙ্গাপুরে প্রতিষ্ঠা করেন ।
• ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ নভেম্বর জাপান সরকার নেতাজির হাতে আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের দায়িত্বভার তুলে দেয় । ৩১ ডিসেম্বর নেতাজি আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জেরনাম রাখেন যথাক্রমে ' শহিদ ' ও স্বরাজ ' দ্বীপ । তাঁর আন্দোলনেরমূল স্লোগান ছিল ' দিল্লি চলো ' ও ' তোমার আমায় রক্ত দাও , আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব ।
• ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল আজাদ হিন্দ বাহিনী কোহিমা দখল করে এবং ভারতীয় সীমানার ১৫০ কিমি পর্যন্ত অগ্রসর হয় । কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় , প্রতিকূল পরিবেশ , জাপানের আত্মসমর্পণ প্রভৃতি সুভাষচন্দ্ৰ বসুর আজাদ হিন্দ বাহিনীর পরাজয় সুনিশ্চিত করে । খাদ্য , সরঞ্জামের অভাব এবং জাপানি সাহায্য বন্ধ হওয়ার দরুন দিশেহারা আজাদ হিন্দ ফৌজ অবশেষে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয় ।
• অনেকের মত অনুযায়ী , ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১৮ আগষ্ট তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষচন্দ্রবসুর মৃত্যু হয় ।
অরবিন্দ ঘোষ
• কংগ্রেসের চরমপন্থী গ্রুপের নেতৃত্বে থাকাকালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে ( ১৯০৫-১৯১১ ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । তিনি ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে ' ভবানী মন্দির ' নামে একটি পুস্তিকা রচনা করেন ।
. • তার লিখিত বাকি গ্রন্থ গুলি হল সাবিত্রী The Life Divine , The Synthesis of Yoga , Essays on the Gita
• ১৯০৮ সালে বন্দেমাতরম পত্রিকায় রাজদ্রোহমূলক রচনা এবং আলিপুর বোমা মামলায় জড়িত থাকার জন্যে অভিযুক্ত হন । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনদাশের প্রচেষ্টায় মুক্তিলাভকরেন এবং সশস্ত্র বিপ্লববাদী পথ পরিহার করে ফরাসী মহিলা মাদাম পল রিশার ( শ্রীমা ) সাথে পণ্ডিচেরীতেআশ্রম গড়ে তোলেন ( ১৯১০ খ্রিস্টাব্দ ) । ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ ই ডিসেম্বরে এই আশ্রমে তিনি দেহত্যাগ করেন ।
• ১৬ ই অক্টোবর বা ৩০ শে আশ্বিন বঙ্গভঙ্গ কার্যকারী হয় । সেদিন সারা দেশে হরতাল পালিত হয় । জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ সেদিন দেশবাসীকে ' রাখি বন্ধন ' - এর পরিকল্পনা দেন । রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী - র প্রস্তাবক্রমে সেদিন সারা দেশে ' অরন্ধন পালিত হয় এবং বাংলার মা - বোনেরা সেদিন ' বঙ্গলক্ষীর ব্রত ' গ্রহণ করেন ।
• ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ১৩ ই জুলাই কৃষ্ণকুমার মিত্র সম্পাদিত ' সঞ্জীবনী ' পত্রিকায় সর্বপ্রথম সরকারের বিরুদ্ধে এক সামগ্রিক বয়কটের কথা ঘোষণা করা হয় ।
• বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় সরকারি ছাত্রদলন নীতি এবং কার্লাইল সার্কুলার ( ১০ ই অক্টোবর , ১৯০৫ খ্রিঃ ) , পেডলার সার্কুলার ( ২১ শে অক্টোবর , ১৯০৫ খ্রিঃ ) , লিয়ন সার্কুলার ( ১৬ ই অক্টোবর , ১৯০৫ খ্রিঃ ) জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনে ইন্ধন জোগায় । ছাত্ররাই ছিল স্বদেশি আন্দোলনের মূল শক্তি ।
• শচীন্দ্র প্রসাদ বসু নেতৃত্বে কলকাতায় ' অ্যান্ট - সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় । আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় - এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ' বেঙ্গল কেমিক্যাল ' ।
• ডঃ নীলরতন সরকার জাতীয় সাবান কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন ।
• কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ' ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ নামে দেশীয় হাসপাতাল ।
. • ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে জামসেদজি টাটা জামসেদপুরে লৌহ ও ইস্পাত কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন ।
• সরলাদেবী চৌধুরানি ' লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার ' প্রতিষ্ঠিত করেন । এই কাজে সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত ' ডন সোসাইটি ' এবং ' অ্যান্টি - সার্কুলার সোসাইটি ' - র ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ ।
• বিপ্লবী আদর্শ প্রচারের জন্য অরবিন্দ ঘোষের পরামর্শ ও ভগিনী নিবেদিতার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বারীন্দ্র ( অরবিন্দ ঘোষের ভাই ) ও ভূপেন্দ্রনাথের ( বিবেকানন্দর ভাই ) উৎসাহে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ' যুগান্তর ' পত্রিকা প্রকাশিত হয় ।
• এ সময় অরবিন্দ ঘোষ সম্পাদিত ' বন্দে মাতরম ' এবং ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় সম্পাদিত ' সন্ধ্যা ' পত্রিকা ও বিপ্লবী ভাবধারা প্রচার করত । • বোমা তৈরি শিক্ষার জন্য মেদিনীপুরের হেমচন্দ্র দাস পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে প্যারিস যাত্রা করেন ।
বাল গঙ্গাধর তিলক 。
famous indian personalities and their achievements in bengali |
*জাতীয়তাবাদ প্রসারের জন্য মহারাষ্ট্রে ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে বাল গঙ্গাধর তিলক গণপতি উৎসব ও ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে শিবাজী উৎসব পালন শুরু করেন । 0 তিনি কেশরি নামক মারাঠি ভাষায় ও মারাঠা নামে ইংরেজি ভাষায় দুটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন ।
• লোকমান্য তাঁর উপাধি ছিল ।
● ব্রিটিশরা তাঁকে ভারতীয় অস্থিরতার জনক ( Father of Indian Unrest ) বলতেন ।
• তাঁর বিখ্যাত বাণী ছিল ' স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার এবং তা আমার চাই ' ( " Swarajya is my birthright and I shall have it ! " . ) • চাপেকার ভাতৃদ্বয় ( Chapekar brothers / Natu brothers ) : দামোদর চাপেকার ও বালকৃষ্ণ চাপেকার ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে পুনের প্লেগ কমিশনার রান্ড কে হত্যা করেন ।বিচারে তাঁদের ফাসি হয় ।
• নাসিকে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে গণেশ দামোদর সাভারকর ও বিনায়ক দামোদর সাভারকর মিত্র মেলা ও ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে বিনায়ক দামোদর সাভারকর অভিনব ভারত বিপ্লবী সংগঠন দুটি গড়ে তোলেন ।
চন্দ্ৰগুপ্ত মৌর্য
famous indian personalities and their achievements in bengali |
*কৌটিল্য বা চাণক্য নামক জনৈক কূটনীতিজ্ঞ ব্রাহ্মণের সহায়তায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ধননন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসনে বসেন এবং মৌর্যবংশ প্রতিষ্ঠা করেন ( ৩২৪ খ্রিঃ পূঃ ) ।
কৌটিল্যবা চাণক্যর আসল নাম ছিল বিষ্ণুগুপ্ত ।
তিনি অর্থশাস্ত্রনামক বিখ্যাত গ্রন্থটিরচনা করেন
। পুরাণ মতে , মৌর্য সাম্রাজের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য - র মাতা অথবা মাতামহী মুরা ছিলেন নন্দ বংশীয় এক রাজার শূদ্রপত্নী ।
মুরার নাম থেকে এই বংশ মৌর্যবংশ নামে পরিচিত ।
সিংহাসনে বসেই চন্দ্রগুপ্ত উত্তর - পশ্চিম ভারতে গ্রিক শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন ।
খ্রীষ্টপূর্ব ৩১৭ অব্দে গ্রিক সেনাপতি ইউথিডিমস পলায়ন করলে ভারতের উত্তর পশ্চিম সীমান্তে গ্রীক শাসনের অবসান ঘটে ।
চন্দ্রগুপ্তগ্রিকদের কাছে সান্ড্রোকোট্রাসনামে পরিচিত ছিল ।
পরবর্তীকালে আলেকজান্ডারের সেনাপতি ও ব্যাবিলনের রাজা সেলুকাস উত্তর - পশ্চিম ভারত পুনরুদ্ধার করার জন্য ভারত আক্রমণ করলে চন্দগুপ্ত মৌর্যের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ হয় ( ৩০০ খ্রিঃ পূঃ ) ।
সেলুকাস এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে শেষ পর্যন্ত এক সন্ধি স্বাক্ষর করেন ।
কথিত আছে যে , তাঁর কন্যা হেলেন - এর সঙ্গে চন্দ্রগুপ্তের বিবাহ দেন ।
সেলুকাসচন্দ্রগুপ্তের রাজসভায়মেগাস্থিনিস নামে এক গ্রিক দূতকে পাঠান ।
মেগাস্থিনিসের ' ইন্ডিকা ' নামক গ্রন্থভারত বিবরণ ইতিহাসেরএক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য গুজরাটের জুনাগড়েসুদর্শন লেকটি নির্মাণকরেন ।
চন্দ্রগুপ্তেররাজপ্রাসাদ ছিল কাঠের তৈরি যার কারুকার্যজগৎখ্যাতছিল ।
ঐতিহাসিক ডঃ হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী তাঁকে ' ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক বৃহৎ সাম্রাজ্যের স্থাপয়িতা ' বলে অভিহিত করেছেন ।
ভদ্রবাহুর কাছে চন্দ্রগুপ্ত জৈন ধর্মে দীক্ষিত হোন এবং জৈনপ্রথা অনুসারে মহীশুরের শ্রবণবেলগোলানামক স্থানে অনশনে দেহত্যাগ করেন ( খ্রিঃ পূঃ ৩০০ অব্দ ) । কৌটিল্যের ' অর্থশাস্ত্র ' , গ্রিক দূত মেগাস্থিনিসের বিবরণ ( ' ইন্ডিয়া ' গ্রন্থে ) , বিশাখদত্তের ' মুদ্রারাক্ষস ' নাটক ও বৌদ্ধগ্রন্থ ' দিব্যবদান ' গ্রন্থ এবং জাস্টিন , এ্যারিয়ান , স্ট্রাবো ও প্লিনি - র রচনা থেকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে জানা যায় ।
অশোক
famous indian personalities and their achievements in bengali |
বিন্দুসারের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র অশোক মগধের সিংহাসনে বসেন ।
• বৌদ্ধগ্রন্থ ' দিব্যবদান ' ও সিংহলী গ্রন্থ ' মহাবংশ ' - তে লিখিত আছে যে তিনি তাঁর নিরানব্বই জন ভ্রাতাকে হত্যা করে সিংহাসনে বসেন । এই কারণে তাঁকে ' চন্ডাশোক ' বলা হত ।
• তাঁরশিলালিপিতে অশোক নিজেকেদেবানামপ্রিয় ( দেওবতাদেরপ্রিয় ) এবং প্রিয়দর্শীনামে উল্লেখ করেছেন ।
• এই গৃহযুদ্ধের কারণেই তাঁর সিংহাসন লাভের চারবছর পর তাঁর রাজ্যাভিষেকহয়েছিল ( ২৬৯ খ্রিঃ পূঃ ) ।
• তাররাজ্যাভিষেকের নবম বর্ষ ( মতান্তরেঅষ্টম ) ২৬০ খ্রিস্টপূর্বাদ্ধে ( মতান্তরে ২৬১ খ্রিঃ পূঃ ) কলিঙ্গরাজ্য জয় করেন । কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহ ফলা ফল দেখে অশোকের ব্যক্তিজীবন এবং মগধের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন দেখা যায় । বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে তিনি চিরদিনের মতো যুদ্ধ নীতি ত্যাগ করেন । কলিঙ্গযুদ্ধের বর্ণনা অশোকের ১৩ তম শিলালিপিতে পাওয়া যায় । অশোকপ্রথম জীবনে শিবের উপাসক ছিলেন । উপগুপ্ত নামক এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরকাছে তিনি বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিতহন । অশোকের ধর্মমত বৌদ্ধ ধর্মের চেয়েও বেশি উদার ছিল । অশোকের এই ধর্মমতকে ' ধম্ম ' নামে অভিহিত করা হয় । অশোকের ১৪ তম শিলালিপিতে এই ধম্মেরকথা উল্লেখ আছে ।
• অশোকের প্রধান ১৪ টি শিলালিপি পাওয়া যায় ৮ টি বিভিন্ন স্থানে । যার মধ্যে বেশির ভাগই প্রাকৃত ভাষায় এবং ব্রাহ্মী হরফে লেখা ছিল । ১৮৩৭ সালে জেমস প্রিনশেপসর্বপ্রথম অশোকের শিলালিপিগুলি পাঠোদ্ধার করেন । তিনি ' ধর্মমহামাত্র ' নামে এক বিশেষ শ্রেণির কর্মচারী নিযুক্ত করেন । তাঁদের কাজ ছিল ভগবান বুদ্ধের বাণী প্রচার । পাটলিপুত্রে তিনি তৃতীয় বৌদ্ধ সম্মেলন আহ্বান করেন ।
• তারপুত্র মহেন্দ্র ও কন্যা সংঘমিত্রাসিংহলে ( শ্রীলঙ্কা ) বৌদ্ধধর্মপ্রচার করেছিলেন । তিনি ঘোষণা করেন যে , " সব মুণিষে পজা মমা " – সব মানুষেই আমার সন্তান । অশোক বহু অতিথিশালা এবং মানুষ ও পশুর জন্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন । উত্তরপ্রদেশেরসারনাথে প্রাপ্ত সিংহ স্তম্ভ ( যা অশোকস্তম্ভ নামে পরিচিতএবং ভারতবর্ষের জাতীয় প্রতিক ) অশোক নির্মাণ করেন । এই স্তম্ভশীর্ষে চারটি এশিয় সিংহ পরস্পরের দিকে পিঠ করে চারদিকে মুখ করে বসে রয়েছে । এই চারটি সিংহ যে ভিত্তিভূমির ওপর দন্ডায়মান সেখানে একটি হাতি , একটি ঘোড়া , একটি ষাঁড় ও একটি সিংহের মূর্তি খোদিত রয়েছে , যাদের মধ্যে একটি করে ধর্মচক্র খোদিত রয়েছে ।
• অশোকের আমলে নির্মিত স্তুপগুলির মধ্যে সাঁচীরস্তুপ সর্ব বৃহৎ ছিল । বরাবরপাহাড়ে অশোক নির্মিতচৈত্য বা গুহামন্দিরখুবই বিখ্যাত । বরাবর পাহাড়ের গুহা স্থাপত্যের মধ্যে লোমশঋষির গুহা স্থাপত্যও নাগাজুনি গুহা স্থাপত্য অন্যতম । তাঁর ধর্ম প্রচারের ফলে পালি ভাষা সর্বভারতীয় ভাষার পরিণতি হয় এবং এই ভাষার গ্রন্থাদি রচিত হতে থাকে । তার আমলে ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী লিপি ভারতের সর্বত্র প্রচলিত হয় । অশোকের মৃত্যু ( ২৩২ খ্রিঃ পূঃ ) -র পরেই বিশাল মৌর্য সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে ।
• এইবংশের শেষ সম্রাটবৃহদ্রথ কে হত্যা করে সৈনাধ্যক্ষপুষ্যমিত্র শুঙ্গ সিংহাসনেবসেন এবং মগধে শুঙ্গ বংশ প্রতিষ্ঠিত হয় ।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ( ১৮২০-১৮৯১ খ্রিঃ )
• ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুর জেলায় বীরসিংহ গ্রামে এক অতি দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে তাঁর জন্ম । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - এর মতে , এক ভীরুর দেশে তিনিই একমাত্র ' পুরুষসিংহ ' ।
• তিনি নিজ উদ্যোগে বাংলার বিভিন্ন স্থানে ৩৫ টি বালিকা বিদ্যালয় ও ২০ টি আদর্শ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন । তিনি জনশিক্ষার জন্য ' বর্ণপরিচয় ' , ' কথামালা ’ ,
● ‘ বোধোদয় ' প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন ।
● তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করে সংস্কৃত কলেজ থেকে । বিদ্যাসাগর নিজ ব্যায় কলকাতায় ‘ মেট্রোপলিটান ইন্সটিটিউশন ' ( বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ ) নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেন । বাংলায় উচ্চশিক্ষা বিস্তারে ভারতের এই প্রথম বেসরকারি কলেজটির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
• ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে বিধাবা বিবাহ আইনসিদ্ধ হয় ।
0 Comments