" একনজরে মুঘল সাম্রাজ্য "
(mughal empire history )
If you want to read this article in in ENGLISH click here
ভারতের বিখ্যাত সাম্রাজ্যঃ গুলির মধ্যে এক মুঘল সাম্রাজ্য যা বাবর এর হাত দিয়ে শুরু হয় ওরঙ্গজেব এসে পতনের মুখে পড়ে।
মুঘল আমলের ইতিহাস রচনার জন্য প্রচুর উপাদান পাওয়া গেছে ।এই উপাদানগুলো মোটামুটি চারটি ভাগে বিভক্ত সাহিত্য, সরকারি নথি , ইউরোপীয় ভ্রমণকারীদের বিবরণ, মুদ্রা ও শিল্প নিদর্শন
সাহিত্য এই যুগের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।মোগল সম্রাট বাবর ও জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনীর ,তুজুক-ই-বাবুরী ,তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী এবং বাবরের কন্যা মুকুল বদন বেগমের স্মৃতিকথা হুমায়ুননামা। মোঘল ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।এছাড়া আবুল ফজলের রচিত আইন ই আকবরী, আকবরনামা কথা কে না জানে।
সরকারি নথি দিল্লি ও বিভিন্ন প্রদেশে রাজনীতি রক্ষিত ফরমান হতেই ও চিঠিপত্র অধিকাংশ বিলুপ্ত হয়ে গেল যতোটুকু আছে তার থেকে বিশেষ করে মোগল আলম জাহাঙ্গীর শাহজাহানের অনেক তথ্য পাওয়া যায়।
ইউরোপীয় ভ্রমণকারীদের বিবরণ ও বাণিজ্য কুঠি নথিপত্র ,পর্তুগিজ ,ফরাসি ,ইংরেজ ,ইউরোপেও পর্যটকদের বিবরণ থেকে নানা তথ্য পাওয়া যায়।
মুদ্রণ শিল্পের নিদর্শন মোগল আমলে প্রচলিত ধাতু থেকে প্রচুর অর্থনৈতিক অবস্থা জানা যায় ।এই যুগের শিল্পকলার পূর্ণতা অর্থনৈতিক অবস্থার উপর।
বাবর
মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হয় বাবর এর দ্বারা। পিতা তৈমুর লং এবং মাতার দিক থেকে চেঙ্গিস খাঁ এর বংশধর ছিলেন বাবর।বাবর 1526 থেকে 1530 তুর্কি ভাষায় বাবর কথার অর্থ হল "সিংহ"।বাবর এর পিতার নাম ওমর শেখ মির্জা।মাত্র 12 বছর বয়সে তিনি এশিয়ার অন্তর্গত ফারঘনা রাজ্যের সিংহাসনে বসেন ।দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোদীর অত্যাচারী তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা বাবরকে ভারতে আক্রমণের জন্য বলেন ।আক্রমণের সাড়া দিয়ে কোন 1524 খ্রিস্টাব্দে বাবুরের সৈন্য পাঞ্জাবি প্রবেশ করে, লাহোর দখল করে। 1525খ্রিস্টাব্দে বাবর কামান বন্দুক ও 12 হাজার সৈন্য নিয়ে ভারতে আক্রমণ করেন দিল্লির কাছে পানিপথের দুই প্রান্তে যুদ্ধ হয় বাবর ও ইব্রাহিম লোদীর সঙ্গে। এই যুদ্ধে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ নামে পরিচিত ।এই যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদী পরাজিত হয় এবং বাবর স্থায়ী হবে ভারত নিজের সাম্রাজ্য বিস্তারের পথ সুদীর্ঘ করে। এরপর 1527 খ্রিস্টাব্দে খানুয়ার প্রান্তের সম্মিলিত রাজপুত বাহিনীর বিরুদ্ধে বাবর যুদ্ধে জয়ী হন ।পনেরশো উনত্রিশ খ্রিস্টাব্দে মাহমুদের নেতৃত্বে বাহিনীর সাথে বাবরের গোগরার যুদ্ধ হয় এবং তাতে তিনি জয়ী হন। 1930 খ্রিস্টাব্দে বাবরের 47 বছর বয়সে মারা যায় ।
হুমায়ুন
বাবর এর মৃত্যুর পর জ্যেষ্ঠপুত্র হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনে বসেন ।হুমায়ুন কথার অর্থ "ভাগ্যবান"। 1532 খ্রিস্টাব্দে মাহমুদ নদীর হুমায়ুন "দাদরা" যুদ্ধে পরাজিত করেন হুমায়ুন ।1539 শের খা সঙ্গে "চৌসারের" যুদ্ধ মোঙ্গলবাহিনীর বিধ্বস্ত হয়। হুমায়ুন কোনক্রমে পালান এরপর 1540 খ্রিস্টাব্দে "বিল গ্রামের যুদ্ধ "আবার তিনি শের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত হন । শের খান মৃত্যুর পর হুমায়ুন আবার দিল্লি লাহোর আগ্রা জয়পুর 1545 খ্রিস্টাব্দে আবার মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।আকবর
আকবর মোগল সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সম্রাট এর মধ্যে আকবরের নাম ধরা হয় ।হুমায়ুনের মৃত্যুর পর রাজকর্মচারী বৈরাম খাঁ এর সহযোগিতায় হিমুর সঙ্গে আকবর পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে জয়ী হন এবং মোগল সাম্রাজ্য উন্নতির শিখরে নিয়ে জান ।1882 খ্রিস্টাব্দে দ্বীন-ই-ইলাহী নামে এক নতুন ভারত আকবর প্রতিষ্ঠা করে ।কেবলমাত্র 18 জন মুসলিম ও একজন বিশিষ্ট হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে। আকবরের মৃত্যুর সঙ্গে ধর্মমতে সমাধি রচিত হয়। আকবরের রাজসভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন, আকবরনামা আইন-ই-আকবরী গ্রন্থের রচয়িতা আবুল ফজল ,হাস্যকর বীরবল ,তানসেন ,সৈয়দ আলী ,রামচরিত মানস এর রচয়িতা তুলসীদাস, সাগর দাস ,এছাড়া আকবর এছাড়া আকবরের সময় নির্মিত ফতেপুর সিক্রি ,সেলিম চিশতির সমাধি ,দেওয়ান-ই-আম ,দেওয়ান-ই-খাস ,জামা মসজিদ, বুলান দারওয়াজা, হুমায়ুন সমাধি, বিখ্যাত স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন ।এছাড়া তাঁর দরবারে সাহিত্য ও শিল্পকলার নিদর্শন হিসেবে তানসেনের কথা না বললেই নয়।জাহাঙ্গীর
জাহাঙ্গীর আকবর এর মৃত্যুর পর জ্যেষ্ঠ পুত্র সেলিম নুরুদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর উপাধি গ্রহণ করে এবং মোগল সাম্রাজ্যের অগ্রগতিতে নিয়ে যায় পিতা আকবরের মতোই তিনি রাজ্য বাদী নীতি গ্রহণ করেন । জাহাঙ্গীর শিখ গুরু অর্জুনকে হত্যা করে। তুর্কি ভাষায় তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী নিজের আত্মজীবনী নরচয়িতা করেন ।
জাহাঙ্গীরী আকবরের সমাধি ,বহু মসজিদ নির্মাণ হয় ।1615 খ্রিস্টাব্দে প্রথম জেমস এর টমাস রো জাহাঙ্গীরের দরবারে আসেন।
শাহজাহান
শাহজাহান জাহাঙ্গীরের দ্বিতীয় পুত্র খুররম ,আবুল মুচ ফর মোহাম্মদ শাহজাহান বাদশা গাজী উপাধি নিয়েছিলেন। শাহজাহানের আমলে মুঘল যুগের স্বর্ণযুগ বলা হয়। তার সময় তেমন যুদ্ধ-বিগ্রহ প্রকৃতির নির্যাতন ছিলনা ।তাই তিনি শিল্প সাহিত্যের ক্ষেত্রে বেশি মনোযোগ দেন ।তার আমলে নির্মিত দিল্লির লালকেল্লা, দেওয়ান-ই-আম, দেওয়ান-ই-খাস ,মোতি মসজিদ ,জামা মসজিদ। শঌময়ূর সিংহাসন খুবই উল্লেখযোগ্য ,তার মধ্যে বিখ্যাত তাজমহলের কথা কে না জানে ।এ যুগের শ্রেষ্ঠ শিল্পী নাদির সমরকন্দী রাজসভায় অলংকৃত করতেন ।শাহজাহানের সে শেষ বছর চরম দুর্দশা কাটে।
ওরঙ্গজেব
ওরঙ্গজেব শাহজাহানের জীবিত অবস্থায় তার চার পুত্র দ্বারা ,সুজা ,ওরঙ্গজেব ও মুরাদ উত্তরাধিকারী সংঘর্ষে রক্ত কি যুদ্ধে জড়িত হন ।আলমগীর বাদশাহ গাজী উপাধি ধারণ করে আরঙ্গজেব সিংহাসনে বসেন ।ঔরঙ্গজেবের প্রায় অর্ধেক জীবন যুদ্ধ বিগ্রহের কেটে যায় ।ওরঙ্গজেব এর রাজত্বকালে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং নবম গুরু তেগ বাহাদুর এর প্রাণদণ্ড সিকদের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভ হয় ।দশম গুরু গুরু গোবিন্দ সিং খালসা বাহিনী গঠন করেন মঙ্গলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য। ওরঙ্গজেব এর সময় রাজপুত বিদ্রোহ এক ভয়াবহ রূপ। নেয় মারাঠা নায়ক শিবাজীর উত্থান ওরঙ্গজেব এর মাথাব্যথা কারণ হয়ে দাঁড়ায় ।শিবাজী কে পুরানে সন্ধি 1665 খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত করেন ।ওরঙ্গজেব হিন্দুদের উপর জিজিয়া ,অমুসলিমদের উপর জাকাং পুনরায় বসান ।শেখ নিজামী নামে জনৈক পন্ডিত সহযোগিতায় তিনি "ফতোয়া-ই- আলমগীর" নামে মুসলিম আইনের এক মূল্যবান সংকলন রচনা করেন ।ওরঙ্গজেব নিজেকে গাজী বলে অভিহিত করতেন । মুসলিম তাকে জিন্দাপীর বলেন। 1707 খ্রিস্টাব্দে ওরঙ্গজেব মৃত্যু হয় তার সাথে সাথে বিশাল মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের সূত্রপাত শুরু হয়। একনজরে মুঘল সাম্রাজ্য(mughal empire history ),If you want some question in mughal empire click here
0 Comments