If You face any problem while reading any article please see this in Desktop mode

what is plants and animals hormones,how they works in bengali full details


হরমোনের

সংজ্ঞা যে সকল জৈব রাসায়নিক পদার্থ জীবদেহে বিশেষ কোনো কোশগুচ্ছ থেকে তৈরী হয়ে অথবা কোনো অন্তঃক্ষরাগ্রন্থি থেকে সৃষ্টি বা অনালগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হয়ে বিশেষ উপায়ে বাহিত হয়ে উৎপত্তিস্থল থেকে দূরের কোন স্থানে কোশের বিপাকীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় তাকে বলে হরমোন

বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ হরমোনের নাম 

( 1 ) অক্সিন ,

 ( 2 ) জিব্বেরেলিন ,

 ( 3 ) সাইটোকাইনিন ,

( 4 ) অ্যাবসাইসিক অ্যাসিড ( ABA ) এবং

( 5 ) ইথিলিনপ্রথম তিনটি হরমোন হল বৃদ্ধি সহায়ক হরমোন শেষ দুটি হল বৃদ্ধি প্রতিবন্ধক হরমোন ইহা ছাড়াও উদ্ভিদদেহে আরও প্রকল্পিত হরমোন বর্তমান যাদের সঠিক রাসায়নিক গঠন জানা অসম্ভব হওয়ায় উহাদের প্রকল্পিত হরমোন বলে প্রকল্পিত হরমোনগুলি হল ফ্লোরিজেন এবং ভার্নালীন এই ফ্লোরিজেন হরমোন ফুল ফোটাতে সহায়তা করে

 

হরমোনের বৈশিষ্ট্য :

( 1 ) হরমোন একপ্রকার প্রোটিনধর্মী , স্টেরয়েডধর্মী বা অ্যামাইনোধর্মী জৈব রাসায়নিক পদার্থ

( 2 ) হরমোন কোশগুচ্ছ বা কোনো গ্রন্থি থেকে নির্গত হয়

( 3 ) হরমোন জৈব অনুঘটকের মতো কাজ করে এবং কাজের শেষে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়

( 4 ) নিঃসৃত স্থান ছাড়া হরমোন দেহের অন্য কোনো স্থানে জমা হয়  না

( 5 ) হরমোন খুব অল্প মাত্রায় ক্রিয়া করে কিন্তু এই ক্রিয়ার স্থায়িত্বকাল অনেকদিন পর্যন্ত

 ( 6 ) হরমোন কোশে কোশে রাসায়নিক বার্তা প্রেরণ করে তাই হরমোনকে রাসায়নিক দূত বা কেমিক্যাল ম্যাসেঞ্জার বলে

( 7 ) হরমোন কোশে কোশে রাসায়নিক সমন্বয় সাধন করে তাই একে কেমিক্যাল কো - অর্ডিনেটার বলে

 

উদ্ভিদ হরমোনের প্রকারভেদ : উদ্ভিদ হরমোনকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত যথা

 ( a ) প্রাকৃতিক হরমোন ( Natural ) – উদ্ভিদদেহে সংশ্লেষিত হরমোনকে প্রাকৃতিক হরমোন বলে যেমনঅক্সিন , জিব্বেরেলিন , সাইটোকাইনিন , ABA , ইথিলিন

( b ) কৃত্রিম হরমোন ( Artificial )উদ্ভিদদেহে সংশ্লেষিত হয় না এমন হরমোন যা কৃত্রিম উপায়ে তৈরী হয় তাকে কৃত্রিম হরমোন বলে যেমনইন্ডোল বিউটাইরিক অ্যাসিড ( IBA ) , ন্যাপথালিন অ্যাসেটিক অ্যাসিড ( NAA )

 ( c ) প্রকল্পিত হরমোন এই সকল হরমোনের সঠিক রাসায়নিক গঠন জানা অসম্ভব তাই এরা প্রকল্পিত হরমোন যেমনফ্লোরিজেন , ভার্নালিন

 

 

অক্সিন

অক্সিনই সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত উদ্ভিদ হরমোন অক্সিনের রাসায়নিক নাম ইন্ডোল - অ্যাসেটিক অ্যাসিড ( IAA ) অক্সিন হরমোন সৃষ্ট হয় টিপটোফেন থেকে

 

অক্সিনের শারীরবৃত্তীয় ভূমিকা :

( a ) কোশবৃদ্ধি ইহা প্রধানত কোশের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে অক্সিন হরমোনের অসম বণ্টনের ফলে উদ্ভিদের মূল কাণ্ডের বৃদ্ধি ভিন্নরূপ হয় যেমনকাণ্ডে অক্সিন হরমোনের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় উহার আলোকবৃত্তি চলন পরিলক্ষিত হয় ঠিক তেমনি অর্ধমূলে অক্সিনের ঘনত্ব কম হওয়ায় উহার অভিকর্ষজবৃত্তি চলন ঘটে

( b ) ট্রপিক চলনউদ্ভিদের চলনে অক্সিনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদের আলোকবৃদ্ধি ( Phototropism ) অভিকর্ষবৃত্তি ( Geotro pism ) চলনে অক্সিনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ অক্সিনের অসম বণ্টনের ফলেই উদ্ভিদ অঙ্গের অসম বৃদ্ধি ঘটে

 ( c ) পার্শ্বীয় মুকুল বৃদ্ধিতে বাধাদানঅক্সিন হরমোন উদ্ভিদ অঙ্গের অগ্রস্থ অংশে সংশ্লেষিত হয় অগ্রস্থ অংশে অক্সিন হরমোন বেশী মাত্রায় 

প্রকাশ পায় সঞ্চিত থাকে বলে , উহা পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধিতে বাধাদান করে সুতরাং অগ্রস্থ ভাজককলা কেটে দিলে পার্শ্বস্থ ভাজককলার বৃদ্ধি তাড়াতাড়ি

 ( d ) মোচন ( Abscission ) — উদ্ভিদের বৃদ্ধির সময় ফুল , ফল , পাতা প্রভৃতি অঙ্গের স্থানান্তর ঘটে , একেই মোচন বলা হয় এই মোচন সম্ভব হয় মোচন স্তর গঠনের ফলে

 ( e ) পার্থেনোকাপি সাধারণত উদ্ভিদে ফলের সৃষ্টি পরাগযোগ নিষেকের ফলেই অসম্ভব কিন্তু পার্থেনোকাপিতে ফলের সৃষ্টি পরাগযোগ নিষেক ব্যতীতই সম্ভব হয় এই জাতীয় ফলে বীজের তৈরী হয় না পরাগযোগ জাতীয় বীজহীন ফল সৃষ্টিকে পার্থেনোকার্সি বলে বর্তমান কালে অক্সিন প্রয়োগ করে বীজহীন আপেল , আঙ্গুর কলা তৈরী হচ্ছে বিজ্ঞানী বেলিস স্ট্যারলিং 1905 সালে জীবদেহে হরমোনের উপস্থিতি প্রথম লক্ষ করেন গ্রিক শব্দ হরম্যাসিন ( hormacin ) থেকে হরমোন কথা তৈরী হয়েছে হরম্যাসিন শব্দের অর্থ হলউত্তেজিত করাজাগ্রত করা

 

জিবেরেলিন

 ইহা সর্বপ্রথম জিবেরেল্লা ফুজিকোরই ( Gibberella Fujikuroi ) নামক একপ্রকার ছত্রাক থেকে নিষ্কাশিত হয়

জিব্বেরেলিনের শারীরবৃত্তীয় ভূমিকা :

 ( a ) বীজের অঙ্কুরোদ্গমে সাহায্য করেবীজ মুকুলের সুপ্তদশা ভঙ্গ করতে জিবেরেলিন বিশেষভাবে কার্যকরী কিছু কিছু উদ্ভিদ রয়েছে যেমন লেটুস এবং তামাকগাছ যারা আলোর অনুপস্থিতিতে অঙ্কুরোদ্গম ঘটাতে পারে না তাই দেখা গেছে এই আলোর অনুপস্থিতিতে শুধুমাত্র জিব্বেরেলিন হরমোন প্রয়োগের দ্বারা এই অভাব মেটানো যায় অর্থাৎ এই হরমোনের প্রভাবে আলোক ছাড়াই বীজের অঙ্কুরোদ্গম সম্ভব হয়

( b ) ফুল ফোটাতে সাহায্য করেজিব্বেরেলিন প্রয়োগে খুব তাড়াতাড়ি গাছের ফুল ফোটানো সম্ভবপর হয়

( c ) খর্বতা রোধ করতেজিব্বেরেলিন - এর সবথেকে উল্লেখযোগ্য কাজ হল এটি জেনেটিক খর্বতা রোধ করতে সাহায্য করে খর্ব উদ্ভিদে খুব কম পরিমাণে জিব্বেরেলিন হরমোন থাকে তাই উহার বৃদ্ধি ব্যাহত হয় কিন্তু যদি খর্ব উদ্ভিদে জিব্বেরেলিন হরমোন প্রয়োগ করা যায় তবে উহার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়

 ( d ) a- অ্যামাইলেজের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে অ্যামাইলেজ নামক শ্বেতসার বিশ্লিষ্টকারী উৎসেচকের কার্যকারিতা জিব্বেরেলিন নামক হরমোনের প্রভাবে বেড়ে যায়

 

সাইটোকাইনিন / কাইনেটিন

 

এটি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে সৃষ্ট একপ্রকার নাইট্রোজেনঘটিত যৌগ ইহার রাসায়নিক নাম 6 - ফুরফুরাইল অ্যামাইনোপিউরিন সাইটোকাইনিন বা কাইনেটিন মেভালনিক অ্যাসিড থেকে তৈরী হয়

 

সাইটোকাইনিনের শারীরবৃত্তীয় ভূমিকা :

 ( a ) কোশ বিভাজনসাইটোকাইনিন হরমোনের প্রয়োগের মাধ্যমে উদ্ভিদের কোশ বিভাজন দ্রুত হারে সম্ভব হয় ফলে উদ্ভিদের সামগ্রিক বৃদ্ধি ঘটে

( b ) বীজের সুপ্তদশা ভঙ্গ করতে সাহায্য করেজিব্বেরেলিনের ন্যায় সাইটোকাইনিন বীজের সুপ্তদশা ভঙ্গ করতে সাহায্য করে যেমনলেটুস তামাকগাছ

( c ) অগ্রন্থ প্রকটতা উদ্ভিদের মুকুল বৃদ্ধিতে সাইটোকাইনিন সাহায্য করে সাইটোকাইনিন প্রয়োগে উদ্ভিদের অগ্রস্থ প্রকটতা হ্রাস পায় ফলে কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি বিকাশে সহায়তা করে

 ( d ) বার্ধক্যের বিলম্বতা ( Delay of Senescence )বয়সজনিত কারণে উদ্ভিদের পাতার হ্রাস ক্লোরোফিলের পরিমাণ কমে যাবার ফলে প্রোটিন ভেঙে যায় , ইহাকে বার্ধক্য বলে প্রথম 1957 সালে রিকমন্ড ল্যাঙ নামক দুই বিজ্ঞানী লক্ষ করেছিলেন এই বার্ধক্যজনিত কারণ রোধ করা যায় যদি উদ্ভিদটিকে সাইটোকাইনিন নামক হরমোন দেওয়া অক্ষত উদ্ভিদে সাইটোকাইনিন প্রয়োগে বার্ধক্যপ্রাপ্ত পত্র , ফল অন্যান্য অঙ্গের বিলম্বতা পরিলক্ষিত হয় কাইনেটিন হরমোনের প্রভাবে এই ফলাফলকেরিকমন্ড ল্যাঙ এফেক্টবলা হয়

 

প্রাণী হরমোন

উদ্ভিদের যেমন পাতায় হরমোন সংশ্লেষিত হয় ঠিক তেমনি প্রাণীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো গ্রন্থি থেকে সংশ্লেষিত হয় প্রাণীদের ক্ষেত্রে মোট তিনপ্রকার গ্রন্থি রয়েছে যথাঅন্তঃক্ষরাগ্রন্থি , বহিঃক্ষরাগ্রন্থি মিশ্রগ্রন্থি

 ( a ) অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি যে সকল গ্রন্থির ক্ষরণ যখন গ্রন্থির বাইরে আসে না , গ্রন্থিমধ্যস্থ রক্তে বা কলারসে মুক্ত হয় তাকে বলে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বা এন্ডোক্রিন গ্ল্যান্ড বা অনাল গ্রন্থি যেমনপিটুইটারি , থাইরয়েড

 

 ( b ) বহিঃক্ষরা গ্রন্থি যে সকল গ্রন্থির ক্ষরণ গ্রন্থির বাইরে বেরিয়ে আসে তাকে বহিঃক্ষরা বা এক্সোক্রিন গ্ল্যান্ড বা সনাল গ্রন্থি বলে যেমনলালাগ্রন্থি যকৃত

 ( c ) মিশ্র গ্রন্থি যে সকল গ্রন্থি অন্তঃক্ষরা বহিঃক্ষরা উভয় গ্রন্থির সমন্বয়ে তৈরী তাকে মিশ্রগ্রন্থি বলে যেমনঅগ্ন্যাশয় শুক্রাশয়

 পিটুইটারি গ্রন্থির অবস্থান মস্তিষ্কের তৃতীয় প্রকোষ্ঠের তলদেশে অবস্থিত স্ফেনয়েড অস্থির সেলাটারসিকা নামক অঞ্চলে পিটুইটারিটি একটি ছোটো বৃত্ত বা ইনফ্যান্ডিবুলামের সাথে সংযুক্ত থাকে

অ্যাডিনোহাইপোফাইসিস কী ?

পিটুইটারি গ্রন্থিকে মোট ছটি অংশে ভাগ করা হয়

সেগুলি হল— ( i ) পারস ডিস্টালিস

( ii ) পারস টিউবেরালিস

 ( iii ) পারস ইন্টারমিডিয়া

( iv ) পারস নার্ভোসা

( v ) মেডিয়ান ইমিনেন্স

 ( vi ) ইনফান্তিবুলাম

প্রথম তিনটি অংশ ভ্রূণের মুখগহ্বর থেকে উৎপন্ন হয় বলে এদের অ্যাডিনোহাইপোফাইসিস বলে স্থানীয় হরমোনউৎপত্তিস্থলে কার্যরত হরমোনগুলিকে স্থানীয় বা লোকাল হরমোন বলে যেমনটেস্টোস্টেরন , প্রোস্টাগ্লান্ডিন , ব্র্যাতিকাইনিন

 

 



Post a Comment

0 Comments

>